Header Ads

Loading...

বিভিন্ন জেলায় বন্যায় পানিবন্দী লাখ লাখ মানুষ : ৮ জনের মৃত্যু

বিভিন্ন জেলায় বন্যায় পানিবন্দী লাখ লাখ মানুষ : ৮ জনের মৃত্যু বন্যার পানির স্রোতে ভেসে গিয়ে আটজনের মৃত্যু হয়েছে। জেলা প্রশাসক মো. তোফায়েল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। গত রবিবার সন্ধ্যায় তোফায়েল ইসলাম এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে জানান, এ পর্যন্ত বন্যার স্রোতে ভেসে গিয়ে মৌলভীবাজারের বিভিন্ন স্থানে আটজনের মৃত্যু হয়েছে। তাদের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। নিহতদের নাম পরিচয় জানা যায়নি। তবে রবিবার  রাতে মৌলভীবাজার শহরের উত্তর মোস্তফাপুর এলাকায় পানির তোড়ে ভেসে গিয়ে নিহত একজনের নাম সোবহান বলে জানা যায়। : জেলা প্রশাসক তোফায়েল ইসলাম জানান, জেলার একটি পৌরসভা ও চারটি উপজেলায় বন্যা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সেনাবাহিনী কাজ করছে। এ পর্যন্ত ৫০০ মেট্রিক টন চাল বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। এ ছাড়া বন্যা আক্রান্ত এলাকায় ১০ লাখ টাকা বিতরণ করা হয়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) মৌলভীবাজারের নির্বাহী প্রকৌশলী রনেন্দ্র শংকর চক্রবর্তী জানান, গতকাল সোমবার সকাল ১০টায় মনু নদীর পানি মৌলভীবাজার শহরের কাছে চাঁদনীঘাট পয়েন্টে ৯৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। মনু রেলওয়ে ব্রিজের কাছে বিপৎসীমার ২৩ সেন্টিমিটার ও কমলগঞ্জে ধলাই নদীর পানি বিপদসীমার ১২৪ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। অন্যদিকে, কুশিয়ারা নদীর পানি বিপদসীমার ৪০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে বলেও তিনি জানান। উজানে ভারতের উত্তর ত্রিপুরায় উল্লেখযোগ্য বৃষ্টিপাত না হওয়ায় মৌলভীবাজার জেলার কুলাউড়া, কমলগঞ্জ ও রাজনগর উপজেলায় বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয়েছে। তবে মনু নদীর বারইকোনাতে প্রতিরা বাঁধের ভাঙন দিয়ে বন্যার পানি প্রবেশ করায় পৌর এলাকা ও সদর উপজেলার মোস্তফাপুর এবং কনকপুর ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চলে পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। শহরের বড়হাট এলাকায় পানিবন্দি মানুষদের উদ্ধার করতে সেনাবাহিনীসহ স্থানীয় জনগণ কাজ করে যাচ্ছে। রাতে হঠাৎ এই ভাঙনের ফলে ঘরে আটকা পড়েন অনেকেই। অনেকেই বাড়ির : দোতলায় আশ্রয় নিয়েছেন। আবার অনেককে উদ্ধার করে নিরাপদ স্থানে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। গত কয়েক দিনের এই অব্যাহত বন্যায় মনু ও ধলাই নদীর বিভিন্ন স্থানে ২৫টি ভাঙন  দিয়ে পানি প্রবেশ করে এই বন্যার সৃষ্টি হয়। : মৌলভীবাজার শহরের চাঁদনীঘাটে মনু নদীর পানি কমতে শুরু করলেও এখনও বিপদ সীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। অপরদিকে কুলাউড়া উপজেলার শরীফপুরে মনু নদীর পানি ও কমলগঞ্জে ধলাই নদীর পানি বিপৎসীমার নিচে দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। দুর্যোগ মোকাবিলা, উদ্ধারকাজ ও অভ্যন্তরীণ আইনশৃঙ্খলা রার্থে নিয়োজিত সেনাবাহিনী, বিজিবি ও ফায়ার সার্ভিস পরিস্থিতি মোকাবিলায় কাজ করে যাচ্ছে। : এছাড়া সিলেটে কয়েক লাখ মানুষ পানিবন্দি, সিলেট-জকিগঞ্জে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন। সিলেটে গত কয়েকদিনের অবিরাম বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে কানাইঘাট, গোয়াইনগাট, জৈয়ান্তাপুর, বিয়ানীবাজার, ফেঞ্চুগঞ্জ ও জকিগঞ্জ উপজেলার প্রায় ৬০টি ইউনিয়ন বন্যা কবলিত হয়ে পড়েছে।  বিশেষ করে জকিগঞ্জ উপজেলার মানিকপুর ইউনিয়নের কালিগঞ্জ বাজারের পুর্বে সায়লাসৃতি হাসপাতালের সামনে প্রায় তিনশত ফুট, সিলেট-জকিগঞ্জ সড়কের জকিগঞ্জ সদর ইউনিয়নের ভরন হাফছা মজুমদার কলেজের সামনে ও বারঠাকুরী ইউনিয়নের উত্তরকূল মেইন রোড প্রবল স্রোতের তোড়ে ভেঙ্গে যাওয়ায় সিলেটের সঙ্গে জকিগঞ্জের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। উপজেলার প্রায় ৮০ ভাগ এলাকার গ্রামীণ  ও শিাপ্রতিষ্ঠান এখনো পানির নিচে। জকিগঞ্জে সরকারিভাবে এখনো কোনো আশ্রয় শিবির খোলা হয়নি। ত্রাণ সামগ্রীর জন্য বন্যার্ত মানুষ হাহাকার করছে। এ পর্যন্ত ১২ টন চাল ও নগদ দেড় লাধিক টাকা সরকারি বরাদ্দ পাওয়া গেছে। উপজেলায় বেসরকারিভাবে ২টি আশ্রয়শিবির খোলা হয়েছে। জকিগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার বিজন কুমার সিংহ জানান, উপজেলার সবকটি ইউনিয়ন এখন বন্যা কবলিত। উপজেলার সুরমা ও কুশিয়ারা ডাইকের প্রায় ১২টি স্থানে ভাঙন দেখা দেয়ায় প্রবল বেগে পানি ঢুকে নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। বিশেষ করে হাতিডহর, নগরকান্দি, মুন্সিবাজারসহ বেশ কয়েকটি গ্রামের ঘরবাড়ি, রাস্তাঘাট, স্কুল, মসজিদ, মাদ্রাসা পানিতে তলিয়ে গেছে। : এছাড়া জকিগঞ্জ সদর ইউনিয়ন, মানিকপুর,খলাছড়া, বিরশ্রী, সুলতানপুর, কাজলশাহ ও জকিগঞ্জ পৌরসভা এলাকার অধিকাংশ এলাকা পানিতে থৈ  থৈ করছে। অত্র এলাকায় জরুরি ভিত্তিতে ত্রান সামগ্রী প্রেরণের জন্য এলাকাবাসী কর্তৃপরে দৃষ্টি আকর্ষণ করছেন।

No comments

Powered by Blogger.